ঢাকা , মঙ্গলবার, ১৪ জানুয়ারী ২০২৫ , ১ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

​বিদ্যুতে বিদেশি বিনিয়োগ কমার শঙ্কা

ডেস্ক রিপোর্ট
আপলোড সময় : ১৩-০১-২০২৫ ১১:৩২:৩৫ পূর্বাহ্ন
আপডেট সময় : ১৩-০১-২০২৫ ১১:৩২:৩৫ পূর্বাহ্ন
​বিদ্যুতে বিদেশি বিনিয়োগ কমার শঙ্কা প্রতীকী ছবি
বিদ্যুৎ খাতে বেসরকারি প্রকল্প বাস্তবায়নে নীতি পরিবর্তন করায় এ খাতে সব ধরনের বিনিয়োগকারীদের নিরুৎসাহিত করার আশঙ্কা করছেন বেসরকারি উদ্যোক্তা, বিনিয়োগকারীরা। গত ৭ই জানুয়ারি বিদ্যুৎ বিভাগের সচিবের সঙ্গে এক বৈঠকে এই উদ্বেগের কথা জানান তারা।

এতদিন বেসরকারি খাতের সকল বিদ্যুৎ প্রকল্পে ‘বাস্তবায়ন চুক্তি বা ইমপ্লিমেন্ট এগ্রিমেন্ট (আইএ)’ করার বাধ্যবাধকতা থাকলেও অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতা গ্রহণের পর তা বাতিল করে। সম্প্রতি ১০ সৌর বিদ্যুৎ প্রকল্পের জন্য আহ্বান করা দরপত্রে এটি বাতিল করা হয়। এর ফলে বিদ্যুৎ খাতে সবধরনের বিনিয়োগকারীরা নিরুসাহিত হবেন। বিশেষ এই খাতে সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগ বাধাগ্রস্ত হবে। পাশাপাশি বিদ্যুতের উৎপাদন খরচ বাড়ার সঙ্গে গ্রাহক পর্যায়ে দামও বাড়বে। এছাড়া বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (পিডিবি) লোকসানও বেড়ে যাবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

খাত-সংশ্লিষ্টরা বলছেন, আইএ বাতিল হওয়ার কারণে সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগ (এফডিআই) বাধাগ্রস্ত হবে এবং বিনিয়োগকারীরা আগ্রহ হারিয়ে ফেলবে। কারণ বিনিয়োগকে ঝুঁকি মনে করবে। এছাড়া আন্তর্জাতিক দাতা সংস্থাগুলোও সক্ষমতা বিবেচনায় ঋণ সহায়তা দেবে না। ফলে প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে হলে বাস্তবায়নকারী কোম্পানির ব্যয় বেড়ে যাবে। এই বাড়তি ব্যয় উৎপাদন খরচের সঙ্গে যোগ হয়ে গ্রাহকের কাঁধে পড়বে।

বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি) গেল বছরের ৫ই ডিসেম্বর আইএ বিধান ছাড়া ৩২৩ মেগাওয়াট ক্ষমতার ১২টি নবায়নযোগ্য বিদ্যুৎ প্রকল্পের জন্য উন্মুক্ত দরপত্র আহ্বান করে। পরে চলতি বছরের ৪ঠা জানুয়ারি পাঁচশ’ মেগাওয়াট ক্ষমতার আরও ১০টি সৌরবিদ্যুৎ প্রকল্পের দরপত্র আহ্বান করে। দরপত্র অনুযায়ী, প্রকল্প বাস্তবায়ন ও চালু হওয়ার পর সরকার ২০ বছরের জন্য একটি নির্দিষ্ট দামে বিদ্যুৎ কিনতে বিদ্যুৎ ক্রয় চুক্তি (পিপিএ) স্বাক্ষর করবে।

সরকারের এমন সিদ্ধান্তে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন এই খাতের বেসরকারি উদ্যোক্তা, বিনিয়োগকারী এবং বিশেষজ্ঞরা। গত ৭ই জানুয়ারি বিদ্যুৎ বিভাগের সচিবের সঙ্গে বৈঠকে এই উদ্বেগ জানান তারা। বৈঠক অংশ নেয়া একটি সূত্র জানায়, আইএ বাতিল করায় অন্তর্বর্তী সরকারের বিদ্যুৎ খাতে নেয়া প্রকল্পগুলোর জন্য ডাকা দরপত্রে দেশি-বিদেশি কোম্পানি বিনিয়োগকারী অংশ কমে যাওয়ার সম্ভাবনার কথা জানিয়েছেন বেসরকারি উদ্যোক্তরা। একইদিন বাংলাদেশ ইন্ডিপেনন্ডেন্ট পাওয়ার প্রোডিউসার এসোসিয়েশনের (বিপা) সভাপতি কেএম রেজাউল হাসনাত বিষয়টি নিয়ে আনুষ্ঠানিক উদ্বেগ প্রকাশ করে বিদ্যুৎ সচিবকে চিঠি দেন।

উল্লেখ্য, বিদ্যুৎ প্রকল্পে ‘বাস্তবায়ন চুক্তি বা ইমপ্লিমেন্ট এগ্রিমেন্ট (আইএ) হচ্ছে  বিনিয়োগের ঝুঁকি মোকাবিলা করার জন্য রাষ্ট্রের সার্বভৌম গ্যারান্টির মতো বিবেচনা করা হয়। এটি মূলত বিদ্যুৎ ক্রয় চুক্তির (পিপিএ) সম্পূরক চুক্তি হিসেবে বিবেচনা করা হয়। আইএ থাকার কারণে বিদেশি বিনিয়োগকারীরা বিনিয়োগের নিশ্চয়তা পায়। আর বাস্তবায়নকারী কোম্পানি স্বল্প সুদে ঋণসহ দাতা সংস্থা থেকে বিভিন্ন সুবিধা পেয়ে থাকে। এই কারণে উৎপাদন খরচ কম হয়। দামও কম থাকে। ইন্দোনেশিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকা, পাকিস্তান, ভারত, শ্রীলঙ্কা, অ্যাঙ্গোলা, সেনেগালের মতো দেশগুলির বিদ্যুৎ ক্রয় চুক্তির (পিপিএ) সম্পূরক চুক্তি হিসেবে আইএ করার বিধান রয়েছে। বাংলাদেশে এ যাবৎ বেসরকারি খাতে যতগুলো বিদ্যুৎ প্রকল্প বাস্তবায়ন হয়েছে, সবগুলোতেই আইএ ছিল।

বাংলাস্কুপ/ডেস্ক/ এনআইএন

সূত্র: মানবজমিন


প্রিন্ট করুন
কমেন্ট বক্স

এ জাতীয় আরো খবর

সর্বশেষ সংবাদ